গত ১৫ মাসের মধ্যে এই প্রথম আলোচনায় বসছে গাজায় যুদ্ধ বিরতি নিয়ে। গাজাবাসীর মুক্তির বিষয়ে কাতারে দোহায় আলোচনা আবার শুরু হয়েছে। এই আলোচনায় মধ্যস্থকারী দেশ কাতার বলছে— তারা এখন একটি যুদ্ধ বিরতির খুব কাছাকাছি অবস্থায় পৌঁছেছে। যা কার্যকর করা ও জিম্মিদের মুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধ বিরতির চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌছেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে এমন তথ্যই উঠে এসছে।
ফিলিস্তিনি এমন একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন— গত ১৫ মাসের মধ্যেই প্রথমবারের মতো ইসরাইল—হামাস কাতারের একি ভবনে অবস্থান করে ৮ ঘণ্টা ধরে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আলোচনা পরোক্ষভাবে কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা মধ্যস্থকারী হিসেবে কাজ করছেন। আলোচনার বর্তমান অবস্থা নিয়ে তারা সন্তুষ্ট। আশা করছে এখন আলোচনা হয়েছে তার মধ্যে প্রধান কয়েকটি বিষয়ে উভয় পক্ষ একমত পোষণ করেছেন। তবে এগুলোর বিস্তারিত নিয়ে এখনও দরকষাকষি চলছে। বলা হচ্ছে যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য গাঁজা ভূখণ্ড থেকে ইসরাইলে শূন্য সরিয়ে নেয়ার যে শর্ত ছিল আমাদের সেটি তারা প্রত্যাহার করেছে।
আন্তজার্তিক সংবাদমাধ্যম থেকে জানতে পেরেছিঃ— প্রথম দিন তিনজন জিমিকে মুক্তি দেবে, জনবহুল এলাকাগুলো থেকে সৈন্য সরিয়ে নিতে শুরু করবে ইসরাইল। পরে হামাস আরও চারজনকে মুক্তি দেবে অন্যদিকে গাজা দক্ষিণ এলাকা থেকে বাস্তচ্যুত মানুষজনকে উত্তর এলাকায় ফেরার সুযোগ দিবে ইসরাইল। তবে তাদের ফিরতে হবে কাতার ও মিশরের কারিগরি নিরাপত্তা বাহিনীর পরিচালিত একটি মেশিনের মধ্য দিয়ে। প্রথম দফায় ৪৪ দিনের জন্য অবস্থান করে উত্তর আর দক্ষিণ সীমান্তের মধ্যে ৮০০ মিটার লম্বা একটি বাফার জোন নিয়ন্ত্রণ করবে ইসরাইল। এক হাজার বন্দি ফিলিস্তিনিকে কারাগার থেকে ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছে তারা। তাদের মধ্যে ১৯০ জন রয়েছে যারা ১৫ বছর এবং তার বেশি সময় ধরে কারা ভোগ করছেন।
বিসিবি কূটনৈতিক সংবাদদাতা পল অ্যাডামস বলেছেন অতীতের যে কোন সময়ের তুলনা একটি যুদ্ধ বিরতি বিরতি চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা এখন প্রবল হয়ে উঠেছে। কাতারের সময় দুপুরের দিকে সাংবাদিকদের কাছে আলোচনার অগ্রগতি তত্ত্ব তুলে ধরেন কাতারের এক মন্ত্রী। তিনি বলেছেন ইসুগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে গিয়ে উভয়ের পক্ষই জটিলতায় পড়েছে। কিছু ছোটখাটো বিষয় হয়তো পুরো প্রক্রিয়াটিকে দুর্বল করে তুলতে পারে। তবে আজই চুক্তি হবে কিনা এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ভাবে তিনি এ ব্যাপারে তিনি বলেন এ বিষয়ে কথা বলা খুব কঠিন। সময়সীমা প্রসঙ্গে তিনি বলেন তবে অতীতের যুদ্ধবিরতি বিষয়ে যে কোন আলোচনা তুলনায় আমরা অনেক বেশি কাছাকাছি অবস্থান করছি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মিস্টার আল আনসারী বলছেন— যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জে বাইডেন এই আলোচনা প্রক্রিয়ার সাথে পুরোপুরি যুক্ত আছেন। একটি চুক্তিতে উপনীত হওয়ার ব্যাপারে একই সাথে কাজ করছেন। এরকম বেশ কিছু ইস্যু রয়েছে যা ছোট বিষয় বলে মনে করা হলেও উভয়পক্ষের আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। নেতানিয়াহুর দুই প্রেসিডেন্ট কথা বলেছেন। এতে করে চুক্তির বিষয়ে বিশেষ আশাবাদ তৈরি হয়েছে এবং একটি চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব হবে বলে মধ্যস্থকারীরা আশা করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম হুমকি দিয়ে বলেছেন ২০ জানুয়ারির মধ্যে যদি যুদ্ধ বিরোধী না হয় তাহলে নড়ক নেমে আসবে। ইসরায়েল প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন এর সাথে কথাও বলেছেন। হামলা প্রায় ১২০০ মানুষ নিহত হয় আর ১৫১ জন জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়। হামাস জানিয়েছেন প্রায় ৪৬ হাজার ৬০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রায় ২৩ লাখ গাজাবাসি বাড়িঘর ছাড়া রয়েছেন।