নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার সোনাবাজু বাজারে সরকারি জায়গা দখল করে অবৈধভাবে আরসিসি স্থাপনা নির্মাণ করছেন মিজানুর সরদার (৪৫) নামের প্রভাবশালী এক ব্যক্তি। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রকাশ্যে তিনি স্থায়ীভাবে দোকানঘর নির্মাণের কাজ করছেন।
প্রভাবশালী মিজানুর সরদার উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের সোনাবাজু গ্রামের মৃত হুসেন সরদারের ছেলে। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী এবং নাটোর মহিলা কলেজের অফিস সহকারি পদে চাকরি করছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ- সোনাবাজু বাজারের পাকাসড়ক ঘেঁষে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত প্রায় ২ শতাংশ জমি জবর দখল করে সেখানে আরসিসি পিলার তুলে স্থায়ীভাবে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছেন মিজানুর সরদার। কিন্তু অভিযুক্ত ব্যক্তি স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী এবং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক নেতা হওয়ায় ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে পারেননি। শুধু মিজানুর সরদার নয়, এলাকার অনেকেই জলাশয়ের উচু জমি অবৈধভাবে দখল করে অন্তত ১৫টি দোকান গড়ে তুলেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় অন্তত ১০ জন বলেন, নাড়িবাড়ি-মানিকপুর পাকা সড়কের কোল ঘেঁষে সরকারি জলাশয় বয়ে গেছে। সোনাবাজু বাজারের পশ্চিম অংশে জলাশয়ের প্রায় ১০ শতাংশ জমি অবৈধভাবে দখল করে মিজানুর ও অন্যরা বিভিন্ন নামে দোকানঘর গড়ে তুলেছেন। সেখানে মিজানুর সরদার সম্প্রতি আরসিসি পিলার নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। অবৈধ এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করে জলাশয়ের জমি অবৈধ দখল মুক্ত করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান এলাকার মানুষ।
এদিকে মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে মিজানুর সরদারের অবৈধ পাকা স্থাপনা নির্মাণের ছবি তোলা এবং তথ্য সংগ্রহ করায় প্রেসক্লাব ভাংচুরসহ আমার সংবাদের গুরুদাসপুর প্রতিনিধি আব্দুস সালামকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন মিজানুর সরদার। এঘটনায় বুধবার (১ জানুয়ারী) দুপুরে গুরুদাসপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন গণমাধ্যমকর্মী আব্দুস সালাম।
অভিযুক্ত মিজানুর সরদার বলেন- কয়েক বছর আগে তিনি সরকারি ওই জমির পজিশন কিনেছিলেন ১০ হাজার টাকায়। সেখানেই তিনি দোকান ঘর নির্মাণ করছিলেন। তবে সাংবাদিকের সাথে খারাপ আচরণ করে তিনি ভুল করেছেন। এতে তিনি অনুতপ্ত।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন- সাংবাদিককে হুমকির বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছেন তিনি। এবিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. সালমা আক্তার বলেন- সরকারি জমিতে অবৈধভাবে পাকা স্থাপনা নির্মাণের সুযোগ নেই। বুধবার সকালে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকে সরেজমিনে পাঠিয়ে নির্মাণ কাজটি সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে। অবৈধ এসব স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালাবেন তিনি।