মাসুদ রানা (৩৪) নামের এক পুলিশ সদস্যের বিবস্ত্র লাশ উদ্ধার করা হয়েছে রাজশাহী জেলা পুলিশ লাইনসের ব্যারাকের শৌচাগারে থেকে। রোববার দুপুরে ব্যারাকের সৌচাগারে গলায় পড়নের প্যান্ট বাধা ঝুলন্ত অবস্থায় মাসুদ রানার লাশটি পাওয়া যায়।
রাজশাহীর বাগমারা থানার যোগীপাড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন। পুলিশের ধারণা তিনি গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে পরিবারের সদস্যরা মৃত্যু নিয়ে রহস্যের কথা বলছেন। পুলিশ সদস্য মাসুদ রানা নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার পাঁচশিশা গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে। তারা দুই ভাই। তিনি ২০১১ সালের ১৫ আগস্ট পুলিশে যোগ দেন। তার বড় ভাই বর্তমানে মালয়েশিয়া প্রবাসী।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, মাস ছয়েক আগে বিয়ে করেছেন মাসুদ রানা। বিয়ের পর থেকে স্ত্রীর সঙ্গে কলহ চলছিল। এনিয়ে মানশিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে ১৪ এপ্রিল মাসুদ রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) রাজপাড়া থানা এলাকায় বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসেন। হাসপাতালে আসার পর জেলা পুলিশ লাইনসের একটি ব্যারাকে থাকতেন। সম্প্রতি খাগড়াছড়ি বদলি হয়েছে তার। রোববার সকালে নতুন কর্মস্থলে যোগদানের জন্য রওনা হওয়ার কথা ছিল মাসুদের।
নিহত পুলিশ সদস্য মাসুদের খালাতো ভাই আব্দুল আলিম বলেন, ব্যারাকের সৌচাগারে মাসুদ রানার লাশটি বিবস্ত্র অবস্থায় ঝুলছিল। হাত দুটো পেটের ওপর ভাঁজ করা। চোখ মুখেও আত্মহত্যার ছাপ ছিলনা। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লেও ব্যারাকের পাশের বাসা থেকে ঘটনাস্থলে আসেননি মাসুদের স্ত্রী। স্ত্রীর পরকীয়া নিয়ে মাসুদের সঙ্গে স্ত্রীসহ শ^শুড়বাড়ির লোকজনের দ্ব›দ্ব চলছিল।
মাসুদের প্রতিবেশি জাকির হোসেন বলেন, আত্মহত্যা করার মতো কোনো পেরেশানি ছিলনা মাসুদের। তবে স্ত্রীর সঙ্গে দ্ব›দ্ব চলছিল। এনিয়ে প্রায়ই কলহ সৃষ্টি হতো পরিবারে।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মাসুদ রানার পারিবারিক সমস্যার কারণে বেশ কিছুদিন ধরে মাসুদ বিপর্যস্ত জীবন কাটাচ্ছিলেন। স্ত্রীর সঙ্গে কলহের জেরে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন।’
রাজপাড়া থানার ওসি আশরাফুল আলম বলেন, মাসুদ রানার পরনের প্যান্ট খুলে শৌচাগারের এক্সস্ট ফ্যানের গ্রিলের সঙ্গে বেধে গলায় ফাঁস দেওয়া ছিল। শনিবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় মাসুদ আত্মহত্যা করতে পারেন।
তিনি আরো জানান, দুপুর দেড়টা পর্যন্ত লাশ ঘটনাস্থলেই ঝুলছিল। সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতের পর লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়। সন্ধ্যায় আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।