দলীয় কোন্দলের জেরে বিএনপি ও যুবদল নেতাকর্মীদের ওপর জামায়াত নেতাকর্মীদের হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৫জন আহত হওয়ার দাবি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর বাজারে ওই হামলার ঘটনাটি ঘটে। এই ঘটনায় দুই পক্ষের কেউ থানায় অভিযোগ দায়ের করেনি।
হামলায় আহতরা হলেন, নাজিরপুর ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক সালেহ আহমেদ বিপুল (৪০), ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক প্রচার সম্পাদক হারুন (৩৬), ইউনিয়ন ওলামা দলের সাবেক সহসভাপতি জামাল হোসেন (৪৫) এবং জামায়াতের দুইকর্মী সোহাগ আহমেদ (৩০) ও কামাল হোসেন (৩২)।
নাজিরপুর ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক সালেহ আহমেদ বিপুল বলেন, বৃহস্পতিবার ইফতারের আগে জামায়াতকর্মী আব্দুর রহিমের সাথে তার বাকবিতন্ডা হয়। তারই জের ধরে সন্ধ্যার পর নাজিরপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর হামিদুর রহমান সবুজের নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। তিনি মাথায় আঘাত পেয়ে দৌড়ে পালিয়ে গেলেও ঘটনাস্থলে বেহুস হয়ে পড়েছিলেন বিএনপি নেতা হারুন (৩৬), ও ওলামা দলের সাবেক সহসভাপতি জামাল হোসেন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। শুক্রবার ইউনিয়ন জামায়াতের ইফতার মাহফিল থাকায় ভয়ে তারা হাসপাতালে ভর্তি হতে পারেননি।
তার দাবি, প্রায় ৫ মাস আগে নাজিরপুরে যুব সমাজের উদ্যোগে একটি ইসলামি মাফফিলের আয়োজন করা হয়েছিল। ওই মাহফিলে স্থানীয় বিএনপির পক্ষ থেকে উপজেলা বিএনপি সাবেক সভাপতি আব্দুল আজিজকে প্রধান অতিথি করার দাবি করা হয়। এদিকে নাটোর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুল হাকিমকে প্রধান অতিথি করার দাবি করে স্থানীয় জামায়াতের নেতাকর্মীরা। বিষয়টি নিয়ে তার সাথে জামায়াতের নেতাকর্মীদের বাকবিতন্ডা হয়। এমনকি ওই মাহফিলে আব্দুল আজিজকে লাঞ্ছিত করে জামায়াতের লোকজন। এই বিষয়টি নিয়ে জামায়াতের সাথে বিএনপি-যুবদলের একটি মতদ্বন্দ্ব চলছিল। সবশেষ বৃহস্পতিবার তার ভাতিজা আপন ইসলামকে শুক্রবার জামায়াতের ইফতার মাহফিলে যোগ দেওয়ার জন্য হুমকি দেন জামায়াতকর্মী আব্দুর রহিম।
ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক প্রচার সম্পাদক হারুন বলেন, বিষয়টি নিয়ে তারা আবদুর রহিমের সাথে তারা কথা বলছিলেন। এ সময় আব্দুর রহিম যুবদল নেতা বিপুলের সঙ্গে হাতাহাতিতে জাড়িয়ে পড়েন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সন্ধ্যার পর জামায়াতের আমিরের নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালান জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই গুরুত্বর আহত হন। তার মাথায় ৭টি সেলাই রয়েছে। বামহাতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা থানায় অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
তবে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে নাজিরপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির হামিদুর রহমান সবুজ বলেন, শুক্রবার নাজিরপুর ইউনিয়ন জামায়াতের ইফতার মাহফিল। জামায়াতকর্মী চিকিৎসক আব্দুর রহিম, সোহাগ আহমেদ ও কামাল হোসেন ওই মাহফিলের বিষয়ে নাজিরপুর বাজারে গণসংযোগ করছিলেন। এ সময় নাজিরপুর ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক সালেহ আহমেদ বিপুলের সঙ্গে বাকবিতন্ডা হয়। বিষয়টি নিয়ে বিপুল লোকজন নিয়ে সোহাগ ও কামালের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এরপরেই দুপক্ষের সংঘর্ষ হয়। এতে জামায়াতের দুই কর্মী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন, রাতেই পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে হামলা বা সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষের কেউ থানায় অভিযোগ দেননি।