চলনবিল অধ্যূষিত নাটোরের গুরুদাসপুর ও সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার সেতুবন্ধন একমাত্র রাস্তাটি পরিণত হয়েছে মরণ ফাঁদে। রাস্তাটি গত ১৫ বছরে একবারও সংস্কার হয়নি। যানবাহন চলাচলে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। বর্তমানে পায়ে হেঁটে চলাও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে ওই রাস্তায়। তবুও জীবিকার তাগিদে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে দুই উপজেলার মানুষ।
জানাযায়- গুরুদাসপুর ও তাড়াশ উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থার একমাত্র রাস্তাটি বয়ে গেছে চলনবিলের মধ্য দিয়ে। দুই উপজেলাকে সংযুক্ত করতে চলনবিলের বুক চিরে প্রায় ৭ কিলোমিটার সাবমার্সিবল রাস্তা তৈরি হয় ২০০৯ সালে। রাস্তাটি গুরুদাসপুর অংশে খুবজিপুর ইউনিয়নের বিলসা পয়েন্ট হতে রুহাই এবং তাড়াশ উপজেলার কুন্দল পয়েন্ট হতে রুহাই এসে শেষ হয়েছে। বর্ষা মওসুমে পানিতে নিমজ্জিত আর শুকনা মওসুমে চলাচলের উপযুক্ত হয় রাস্তাটি। বর্তমানে রাস্তাটি চলনবিলবাসীর জীবনের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুই উপজেলাবাসীর দাবির মুখে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বারবার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এ রাস্তাটিতে।
রবিবার (৫ মে) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- সংস্কারের অভাবে বর্তমানে এ রাস্তাটি একেবারেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ঢালাই ভেঙ্গে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও রাস্তা ধসে রড বের হওয়ায় পায়ে হেঁটে চলাও যেন জনসাধারনের কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে কখনও কখনও যানবাহন গর্তে পড়ে উল্টে গিয়ে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। পণ্য পরিবহনেও ভোগান্তির শেষ নেই।
স্থানীয়রা আক্ষেপ করে বলেন- রাস্তাটি সংস্কার করা অতীব জরুরী। চলনবিলের দুই উপজেলার বুকচিরে এ রাস্তা। রাস্তাটি এমন অবস্থা যে, একটু বৃষ্টি হলে যানবাহন তো দূরের কথা পায়ে হেঁটে চলাচল কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। বিলের ফসল ঘরে তুলতে অনেক বেগ পেতে হচ্ছে কৃষকদের। স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা পড়–য়া শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার মানুষকে উপজেলা থেকে জেলা ও জেলা সদরে যোগাযোগে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এ রাস্তা দিয়ে বয়স্ক নারী-পুরুষ বিশেষ করে অসুস্থ রোগি হাসপাতালে নিতে যানবহন না পাওয়ায় পড়তে হয় বিপাকে। চলনবিলবাসীর এ দুর্ভোগের কথা আওয়ামীলীগ সরকার আমলে স্থানীয় প্রতিনিধিদের কাছে বার বার বলেও লাভ হয়নি। এ দুর্ভোগ নিরসনে তারা চাইলেন বর্তমান সরকারে হস্তক্ষেপ।
খুবজিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম দোলন বলেন- রাস্তার এমন অবস্থার কথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও স্থানীয় এলজিইডি কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়েছে। রাস্তাটি দ্রæতই মেরামত করা হবে এমনটি তারা আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
গুরুদাসপুর উপজেলা প্রকৌশলী বিভাগের কর্মকর্তা মিলন মিয়া বলেন- চলনবিলের ওই রাস্তাটি পরিদর্শন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে রাস্তাটি মেরামতের পাককলন তৈরি করে হেড অফিসে পাঠানো হয়েছে। পাককলনটি অনুমোদন হলে দ্রুতই রাস্তাটি সংস্কার করা হবে।