ঢাকামঙ্গলবার , ১ জুলাই ২০২৫
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-বিচার
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আবহাওয়া
  6. কৃষি-সংবাদ
  7. খেলা-ধুলা
  8. চাকরি-খবর
  9. জাতীয়
  10. জীবনযাত্রা
  11. তথ্য ও প্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. দুর্নীতি
  14. ধর্ম
  15. ফিচার
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গুরুদাসপুরে হিমাগার না থাকায় ৩৫ শতাংশ ফল নষ্ট হয়

Link Copied!

গুরুদাসপুরে হিমাগার না থাকায় বা অব্যবস্থাপনায় ৩৫ ভাগ পচনশীল ফল/ ফসল নষ্ট হয়ে যায়

ঐতিহাসিক চলনবিলের প্রাণকেন্দ্র রাজধানীর থেকে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন ( রাসিক) এবং দক্ষিন বঙ্গের এর অন্যতম প্রবেশদ্বার নাটোরের গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম নানা রকমের ফল-ফসল উতপাদনে দেশ সেরা অধিক উর্বর মাটি।এই দুই উপজেলার মাটি দো আঁশ , বেলে দো আঁশ ও এঁটেল দো আঁশ হওয়ায় সোনার চেয়েও খাঁটি। যে কোন ফসল অল্প খরচে অধিক উতপাদন হয়।কৃষকরা স্বল্প খরচে চাহীদার চেয়ও উদ্বৃত্ত নানা রকম ফল ও ফসল আবাদ করে নিজ এলাকার চাহিদা মিটায়েও রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে।

কিন্তু দুঃখের বিষয়অব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষনের অভাবে ৩০% থেকে ৪০% ভাগ পচনশীল ফল ও ফসল নষ্ট হয়ে যায়। অথচ প্রয়োজনিয় সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষনাগার থাকলে এবং সয়মত সংরক্ষন করতে পারলে কৃষকরা আর্থিকভাবে অধিক লাভবান হতে পারতো। অর্থনৈতিক প্রবৃবৃদ্ধি বাড়তো। সেই সাথে আরো বেশি ফল-ফসল আবাদ করতে উতসাহিত হতো।

গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মঃ হারুনর রশিদ জানান, ভূ প্রকৃতির দিক থেকে নাটোর জেলার গুরুদাসপুর ও পার্শ্ববর্তি বড়াইগ্রাম উপজেলার মাটি দো আঁশ , এটেল দো আঁশ , এবং বেলে দো আঁশ প্রকৃতির হওয়ায় অন্যান্য এলাকার মাটির চেয়ে অধিক উর্বর, তাই এ অঞ্চলে সবধরনের ফল ও ফসলের আবাদ এবং ফলনও বেশি হয়। কিন্তু গুরুদাসপুর –বড়াইগ্রাম এলাকায় কোন ফল-ফসল সংরক্ষনের হিমাগার বা সংরক্ষনাগার না থাকায় ৩০ থেকে ৪০ ভাগ পচনশীল ফল-ফসল পচে অথবা পোকায় আক্রান্ত হয়ে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে কৃষকের বহু কষ্টে উতপাদিত স্বপ্নের ফল-ফসলের লাভ দুঃস্বপ্নে পরিনত হয়ে যায়। হা রভেষ্টিং সময়ে কাচা-ভেজা ফল ও ফসল পানির দামে বিক্রি করতে হয়। এসময়ে ন্যায্য দাম নাপাওয়ায় এবং সঙ্গক্ষনের ব্যবস্থা না থাকায় অনেক ফল/ ফসল জমিতেই নষ্ট হয়ে যায়।

উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃহারুনর রশিদের দেওয়া তথ্য মতে যে পরিমান পচনশীল ফল ও শষ্য উতপাদন হয় তা হচ্ছে-আম – ২৮০ হেক্টরে ৩ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। লিচু – ৪১০ হেক্টরে ৩ হাজার ৬৯০ মেট্রিক টন,তরমুজ – ৭৯০ হেক্টরে ২৬ হাজার ৮৬০ মেট্রিক টন, বাংগি -৮৫০ হেক্টরে ২১ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন, মিষ্টি কুমড়া ২ হাজার মেট্রিক টন,কুল/ বড়ই -৪৫ হেক্টরে ৭৫৬ মেট্রিক টন, পেয়ারা- ৪০ হেক্টরে ৬০০ মেট্রিক টন সহ সর্বমোট ২হাজার ৪১৫ হেক্টরে ৫৬ হাজার ৬৫৬ মেট্রিক টন ।এই উতপাদিত মোট ৫৬৬৫৬ মেট্রিক টন টন ফসলের মধ্যে সংরক্ষনের অভাবে গড়ে ৩৫% অর্থাৎ ২০ হাজার মেট্রিক টন পচে বিনষ্ট হচ্ছে শুধুমাত্র গুরুদাসপুর উপজেলায় ।

এছারা এবারে উতপাদন হয়েছে নাটোর জেলায় ৭ উপজেলায় ২ লাখ ১২ হাজার মেট্রিক টন রসুন যা দেশের মোট উতপাদনের ৪২ %। এর মধ্যে গুরুদাসপুর উপজেলায় ৬৮ হাজার ১৪৫ মেট্রিক টন এবং বড়াইগ্রাম উপজেলায় ৮৩ হাজার ৯৫ মেট্রিক টন সহ মোট ১ লাখ ৫১ হাজার ২৪৩ মেট্রিক টন। যা জেলায় মোট উতপাদনের ৭২%।মসলা জাতীয় কৃষকের মুল্যবান ফসল রসুন প্রধান ফসল হওয়ায় সমস্ত পুঁজি, শ্রম, মেধা বিনিয়োগ করে রসুন আবাদে। কিন্তু গুরুদাসপুর – বড়াইগ্রামের প্রতিটা কৃষকের বাড়িতে সংরক্ষন ও ব্যবস্থাপনার অভাবে বেশিরভাগ রসুন কমদামে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয় এবং ঘরে গাদা করে রাখে । এতে গেদাকৃত রসুন পচে এবং পোকায় খেয়ে নষ্ট হয়ে যায়।

কৃষি অফিসার জানান, কৃষকের কষ্টে উতপাদিত ফল/ ফসল সংগ্রহোত্তর সংরক্ষন বা অব্যবস্থার জন্য শতকরা ৩০ থেকে ৪০ ভাগ নষ্ট হয়ে যায়। এতে কৃষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। অপরদিকে জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। ঘাটতি সসুন ডলার দিয়ে আমদানি করতে হচ্ছা। অথচ এসব ফল/ ফসল রক্ষা করতে পারলে দেশের আয় বাড়বে আবার আমদানি হ্রাস পাবে সেই সাথা বৈদাশিক মুদ্রা বাঁচবে। সংগ্রহোত্তর সংরক্ষন বা ব্যবস্থাপনার সুযোগ থাকলে গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম এবং পার্শবর্তি সিংড়া, চাটমোহর এবং তাড়াশ উপজেলার কৃষকরা ঘাম ঝরিয়ে বহু কষ্টে উতপাদিত ফল/ফসল বেশি দামে বিক্রি করে অর্থনৈতিক লাভবান হবেএবং উতপাদন বাড়াতে উতসাহিত হবে। বিষয়টি ভেবে দেখার জন্য কৃশি অধিদপ্তরের উদ্যোগ কামনা করছেন কৃষকরা।

তরুন রাজনীতিবিদ অধ্যাপক ব্যারিষ্টার আবু হেনা মস্তো্ফা কামাল সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর ভেরিফায়েড নিজস্ব পেজে মন্তব্য করেছেন,অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতাও গুরুদাসপুর – বড়াইগ্রামের কৃষি শিল্পের একটি বড় বাধা। উৎপাদিত ফল ও ফসলের প্রায় ২৫ শতাংশ নষ্ট হয়ে যায় মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে, যার প্রধান কারণ পর্যাপ্ত সংরক্ষণ সুবিধার অভাব। বর্তমানে এই অঞ্চলে কোল্ড স্টোরেজের ধারণক্ষমতা মাত্র ২৫০ মেট্রিক টন। ভারতে মুজাফফরপুর অঞ্চলে প্রতি ২০ কিলোমিটারে একটি করে কোল্ড চেইন ইউনিট থাকায় তাদের ক্ষয়ক্ষতি ন্যূনতম। পাশাপাশি, ঢাকা-নাটোর মহাসড়কের সংযোগ সড়কের প্রায় ৩৫ শতাংশই খারাপ অবস্থায় রয়েছে। ফলে পরিবহন সময় বেড়ে যায় দ্বিগুণ এবং গড়ে ১২ শতাংশ ফলন নষ্ট হয়।#

# আবুল কালাম আজাদ, সাংবাদিক ও কলামিষ্ট

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।